Saturday 20 November 2021

#গল্প১ #pandemicepiphany

#গল্প১ #pandemicepiphany

ঠিক যেমনটা আমার হয়েছে, সেটা এক্সপ্রেস করার জন্য আজ একটা নতুন শব্দ শিখলাম! প্যান্ডেমিক এপিফ্যানি!
একদম এরকমই তো ভেবেছিলাম, তার জন্য শব্দ আছে যখন, আমার মত অনেকেই ভেবেছেন! একা নই, একা নই মোটে!
২০২০ এর লক ডাউন থেকে ২০২১ ফেব্রুয়ারি- মার্চ, এক বছর গোটা পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটে গেছে। সত্যি বলতে যা ঘটছে, তা নিয়ে ভাবনার অবকাশ খুব কমই পেয়েছি! কারণ কাজ। সকাল থেকে রাত অব্দি আমি শুধু কাজ নিয়ে ভেবেছি। কি কাজ বলতে গেলে আরেকটা গল্প, বা উপন্যাস হয়ে যাবে। একটু একটু করে বলব। এখন আসি এপিফ্যানি তে!
এই সময়, মোটামুটি ১৮-১৯ দিন টানা অফিস করি, রোববার এবং পাবলিক হলিডে সমেত। কোনো পেশায় একমাত্র যুদ্ধ চলাকালীন সৈন্য-সামন্ত ছাড়া আর কেউ এমন দানবীয় কাজ করে বলে আমার জানা নেই!
একদিন ফোন ঘেঁটে দেখলাম, আমার সারা ফোন জুড়ে কম করে হলেও ১০-১৫ জন মানুষের নম্বর আছে, যাদের আমি বিগত এক বছরে মিট করেছি, যারা অত্যন্ত প্রতিষ্ঠিত জীবনে, অথচ গত এক বছরে অকালে চলে গেছেন।
এক মুহুর্ত থমকে গেলাম! কিসের কাজ, কিসের ভবিষ্যত পরিকল্পনা, কিসের সাফল্য, কিসের পাওয়ার, কিসের ফিনান্সিয়াল ইন্ডেপেনডেন্স!
আমি কি জানি পাঁচ বছর পর দূরের কথা, পাঁচ দিন বাদে বেঁচে থাকবো কিনা?
যা করতে চাই, এখুনি করতে হবে! লিভ ইন দ মোমেন্ট!
একটা দানবীয় কাজ শেষ করে আরেকটায় হাত ছোঁয়ানোর আগে, জানিয়ে দিলাম, আর না!
১০ দিনের মাথায় মালপত্র তুলে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। কলকাতা থেকে বারাণসী, বারাণসী থেকে লখনউ, লখনউ থেকে আগ্রা হয়ে ঢুকে পড়লাম কাশ্মীর!
যখন বেড়িয়েছি, জানি না কতটা গাড়ি চালাতে পারব! ঠিক করেছিলাম, যতটা পারব চালাবো, তারপর ফিরবো। সঙ্গে পরিবারের আরো তিনজনের মধ্যে দুজন অল্প স্বল্প চালাতে পারেন শহরের মধ্যে। কিন্তু হাইওয়ে আর পাহাড়ে, স্টিয়ারিং ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।
চালিয়ে গেছি, এক এক করে সব কটা টার্গেট কমপ্লিট করে পুরো কাশ্মীর ঘুরে ঠিক পরিকল্পনা মাফিক বাড়ি ও ফিরেছি, ৫৫০০ কিমি র পরে!
রাস্তার একটা আলাদা মজা আছে। যারা কোনোদিন রোড ট্রিপ করেন নি, শুধু ফ্লাইটে ঘুরেছেন, বুঝবেন না!
একটার পর একটা রাজ্য, আমার দেশ দেখা, মানুষ দেখা। পাঞ্জাব এ সর্ষে ক্ষেতের পাশ দিয়ে , কৃষক বিদ্রোহে সামিল হতে যাওয়া ট্রাক্টর চাপা মানুষের সঙ্গে গাড়ি চালানো। কাশ্মীর এ ডাল লেকের পাশে পাশে গোল গোল করে ঘোরা, সঙ্গে ফুল ভলুমে বন্দেমাতরম বাজানো!
রাস্তায় কতবার ওয়েস্ট বেঙ্গল রেজিস্ট্রেশন দেখে লোকে এসে এসে কথা বলেছেন, কতজনের কত রকম সম্পর্ক রয়েছে কলকাতার সঙ্গে, বাংলার সঙ্গে!
কাশ্মীর এ শঙ্করাচার্য্য মন্দিরের সামনে আর্মির জওয়ান আমাকে শিখিয়েছেন কিভাবে খাদের দিকে ব্যাক এ না গিয়ে গাড়ি টার্ন নিতে হয়! লখনউ তে ইমাম এসে ঘুরিয়ে সব দেখিয়েছেন, তার হিসেবে আল্লাহ গড ভগবান সব একেকটা নাম, ঠিক যেমনটা রামকৃষ্ণ দেব বলতেন। আবার হজরতবাল এ হিন্দু শুনে অবাক হয়ে গেছেন গোঁড়া কেউ। অনেক কড়া কড়া প্রশ্ন করেও আমি একটুও রাগ করছি না দেখে অবশেষে মেনে নিয়েছেন আমারও যোগ্যতা আছে ওখানে যাওয়ার!
আমার দেশ যে কি বিপুল, বিশাল, বৈচিত্র্যময়তায় ভরা, রাস্তায় না বেরোলে তার কিচ্ছুটি বোঝা যায় না!
ক্রমশ:...
ভিডিওটি শ্রীনগর থেকে পাহেলগাম যাওয়ার পথে, ১১ই মার্চ, ২০২১ এ তোলা Link: https://www.facebook.com/avradip.saha/videos/417136023344742

No comments:

Post a Comment